মূল বইটি পর্তুগালের এভোরা শহরে আছে। ঐতিহাসিক পণ্ডিত সুরেন্দ্রনাথ সেন এটা আবিষ্কার করেন। রোমান লিপিতে লেখা মূল রচনা বাংলা লিপিতে রূপান্তর করে প্রকাশ করেন। গ্রন্থটির নাম দেয়া হয় "ব্রাহ্মণ-রোমান ক্যাথলিক সংবাদ" তবে পর্তুগীজ নামের সম্পূর্ণ অনুবাদ করলে সম্পূর্ণ নাম হবে - "জনৈক খ্রীস্টান অথবা রোমান ক্যাথলিক ও জনৈক ব্রাহ্মণ বা হিন্দুদিগের আচার্যের মধ্যে শাস্ত্রসম্পর্কীয় তর্ক ও বিচার"।
বাংলা গদ্যে রচনা তখনও শুরু হয় নি। ফলে তিনি কোন আদর্শ রচনাকে সামনে পাননি। পর্তুগীজ ভাষায় প্রচলিত গদ্যকে অবলম্বন করে তিনি বইটি লিখেছেন।
কথোপকথনের ভঙ্গিতে রচিত বইটিতে ব্রাহ্মণ কোন প্রসঙ্গ টানলে পাদরি তার দোষ ধরেন। এই ছিল বইটির মূল রচনাভঙ্গি।
ব্রাহ্মণ: ভালো এহা তো উসেদ করিলা, আর অবতার কহি তাহার বিচার কহ।দোম আন্তোনিও হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও হিন্দুধর্ম সম্পর্কে ভাল জানতেন না। এর পরিচয় তার লিখিত বইতেই রয়েছে। হিন্দু ধর্মকে হাস্যকর প্রতিপন্ন করতে গিয়ে তিনি অনেক জায়গায় নিজেকেই হাস্যাস্পদ করে তুলেছেন। আপত্তিকর ভাষায় হিন্দু ধর্মকে আক্রমণ করে নিজ ধর্মের মহিমা প্রকাশে তিনি মোটেও কার্পণ্য করেননি। তার গদ্যের আরেকটি উদাহরণ:-
পাদরি: এহা নি তোমি মিথা হেন জানিলা? তবে আর অবতার কহিলে বুঝিবা সেই রূপ মিথা, ভালো আর অবতার কত।
ব্রাহ্মণ: আর অবতার ত্রেতা যুগে শ্রী রামো দশরথের বেটা, কোশল্যা তাহান মাতা।
পাদরি: এ অবতার যে কহিলা শ্রী রামো কি কারন অবতার হই আসিলেন?
ব্রাহ্মণ: রাবণ বধের কারণ: শে শকল দেবতারে কষ্ট দিত ধর্ম নষ্ট করিত।
পাদরি: ভালো সকল চরিত্র কহিবা রামের; তবে বুঝাইব কেমতে পরমো ব্রহ্ম তিনি।
বলি বড়ো ধর্মষ্ঠ ছিলো যে যাহারে চাহিত, তাহারে তাহা দিতো এ কারণে পরমেশ্বর ব্রাহ্মণ রূপে হইয়া একপদ দিয়া পৃথিবীতে, একপদ পাতালে, আর পদ স্বর্গে, এইরূপে বলিরাজারে ছলিলেন।তথ্যের আকর হিসেবে দোম আন্তোনিওর গ্রন্থের মূল্য যাই হোক না কেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম গদ্যগ্রন্থ হিসেবে এর নাম বাংলা ভাষার আয়ুসমান স্থায়ী থাকবে।
২টি মন্তব্য:
সুশান্ত: পরিবর্তনগুলো ভাল হয়েছে। অন্য রকম।
ধন্যবাদ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন